নিশিরাত, স্ট্রীট ল্যাম্প এবং পোকা
নিশিরাত, স্ট্রীট ল্যাম্প এবং পোকা
Abhilash Sinha , Third Year Undergraduate , IIT Kharagpur
কনজারভেশনিস্টরা কিন্তু আদতে স্বার্থপর। আবার তাদের অ্যান্টিরাও তাই। মানে ধর তোমার ধারণা - এসব গাছ পালা, জীবজন্তু, পাহাড় পর্বত, জল বায়ু বাঁচিয়ে কি লাভ? তোমার জীবনে যে কটা দিন তাতে আর কীই বা হবে? -- ওরা পুড়ে মরুকগে, আমার বয়েই গেলো। আবার ধর তুমি উল্টোটা - তাহলেও তো তুমি তোমার আগামী প্রজন্মের কথা ভেবেই...। খুবই তুচ্ছ ব্যাপার হয়তো, কিন্তু selfish আমাদের সবাইকে হতেই হবে।
“There is an utterly magical time that occurs at tropical dusk. It is when the calls of birds wheeling overhead recede into the distance, and the constant pulse of insect and frog calls fills the air. The inflection point where both sounds are equal in volume coincides with a time when the failing light is ethereal. This heralds the other half of biodiversity, the nocturnal. Within the forest the phosphorescent light of Pyrophorus beetles leaves green trails in their wake to tempt would be mates to follow. The eerie glow of bioluminescent fungi astonishes, but vanishes instantly in the light of a headlamp. The pale moonlight gives a reflected glimpse of bats trolling the surface of oxbow lakes. Overhead one can gaze into black velvet sky to see stars, and comets and the cosmos beyond. This is the stuff dreams are made of.”
[Source: Ecological Consequences of Artificial Night Lighting. Catherine Rich & Travis Longcore (eds). 2006. Island Press. Covelo, CA. Pages 281-304.]
পোকাই তো রে বাবা !!!
আমাদের এই আলোচনা পোকামাকড় সংক্রান্ত, অতএব এখানে তাদের উপকারিতা সংক্ষেপে হলেও পরম আলোচ্য। পৃথিবীতে মোট গ্রাস করা প্রাণী প্রোটিন এর দুই-তৃতীয়াংশই আসে পোকামাকড় থেকে। কারণ দেখো, global predator food pyramid গুলোর একদম নিচে আছে তারা। সেখানে আবার মানুষের স্থান একেবারে উপরে। Pyramid তো আর সাধ করে বলা হয় না, যেকোনো সাধারণ দালান বাড়ির চেয়ে এদের ভিত অনেক গুণ মজবুত, তবেই তো কত সহস্র বছর ধরে কত ঝড় ঝাপটা সামলে নির্দ্বিধায় দাঁড়িয়ে আছে। এবার মনে করো আমাদের খাদ্য pyramid গুলোর ভিতটাই যদি নড়ে যেতে থাকে, উপরের স্তরের প্রাণী গুলোর খাদ্য উৎস ব্যাপক হারে প্রভাবিত হবে। দুর্ভাগ্যবশত, আলো দূষণ পোকামাকড়ের এক পরম শত্রু, এবং ক্ষতিটা আমাদের ওদের অজান্তেই হচ্ছে, তাই তো এ বিষয়ে ভাবার সময় হয়েছে।
প্লট
দৃশ্যটা আমাদের খুব চেনা। সন্ধ্যে হয়ে এলে, বারান্দা কিংবা গ্যারেজের আলোগুলো জ্বালিয়ে দেখো। কিছুক্ষনের মধ্যে ডজনে ডজনে বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড়ের দেখা মিলবে। কৃত্রিম আলো অনেক রকমের পোকা আকর্ষণ করে থাকে। ব্যাঙ এবং অন্যান্য পোকামাকড় গ্রাস করা প্রাণীর দেখাও মিলতে পারে। তাদের জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর কি হতে পারে? তবে , ঠিক কি কারণে পোকাগুলো আলোর প্রতি এত আকর্ষিত হয়?
নিশাচর পোকামাকড় রাতের দিকে চাঁদের আলোর সাহায্যে পথ নির্দেশ করে থাকে। কারণ তাদের বিবর্তন এই ভাবেই ঘটেছে। এবার কৃত্রিম আলো (artificial light) তাদের কাছে এক অজানা জিনিস , মূলত আমাদের আবিষ্কার তাদের evolution এর চেয়ে অনেক গুণ বেশি হারে এগিয়ে চলার ফল। চাঁদের প্রতিফলিত আলোর রেখার সঙ্গে কোন অপরিবর্তিত রেখে পোকা তার পথ স্থির রাখতে শিখেছে এবং অবিচলিত ভাবে উড়তে শিখেছে। কিন্তু artificial light এর আগমনে তাদের হতে হয়েছে বলির পাঁঠা।
কাছাকাছি এই ধরনের আলো জ্বললে, স্বাভাবিক ভাবেই পোকার কাছে চাঁদের আলো আর দৃষ্টিগোচর হবে না। মাথায় রাখতে হবে, পোকার আয়তন আর দৃষ্টি ক্ষমতা। Light bulb রাতে উজ্জ্বলতর দেখায় এবং সমস্ত দিকে আলো বিকিরণ করে থাকে। যেই পোকা এই আলোর সান্নিধ্যে চলে আসে সে এটাকেই চাঁদ বলে মনে করে এবং এর মাধ্যমে নিজের পথ নির্দেশক প্রক্রিয়া চালাতে থাকে।
চাঁদ এবং পৃথিবীর আয়তন, চাঁদ-পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ দূরত্ব মাথায় রাখলে, চাঁদের আলো-রেখা পৃথিবীতে যে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে, মোটামুটি একটি সরল রেখা ধরে নেওয়া যায় (approximately) । এতে সমকোণ ধরে এগোনো অনেক সহজ। কিন্তু একটি artificial light source প্রায় 180 ডিগ্রি এবং তার বেশি জায়গা জুড়ে আলো ছড়িয়ে দিতে থাকে। তাতে সমকোণ ধরে এগোলে পথ সোজা রাখা অসম্ভব । পোকা এই তত্ত্ব বুঝে উঠতে পারেনি। অতঃপর light এর চারপাশে চরকি কাটতে থাকে। এই ঘূর্ণাবর্তে পাক খাওয়াকেই বিজ্ঞানীরা "endless spiral dance" বলে থাকেন। অঙ্ক কষে দেখা যায়, পোকা যে একগুচ্ছ নিয়ম মাথায় রেখে এগিয়েছে, তা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলে ওই পথের সমীকরণ হয়ে দাঁড়ায় একটি spiral !
প্রভাব
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস আলো দূষণ পোকামাকড়ের কমে আসার পিছনে বড় কারণ। জানো কি, artificial light এর উপস্থিতিতে fireflies দের একে অপরকে চিনে নিতে বেশ অসুবিধা হয় বলে জানা গিয়েছে?
একটি moth কয়েকটি সপ্তাহ মাত্র বাঁচে। একটি সম্পূর্ণ রাত এইভাবে যদি তারা কাটিয়ে দেই, প্রথমত তাদের জীবনের একটি significant fraction নষ্ট যায়, এবং এই সময় তাদের প্রজনন কাল চললে তা বিফল হয়। তখন সেটা জাতিগত ক্ষতি হয়ে দাঁড়ায়। সন্ধ্যে থেকে ভোরবেলার মধ্যে তারা যোগ্য সঙ্গীর সন্ধান করে, সেই জায়গায় আলো আকৃষ্ট হয়ে তারা শারীরিক শক্তির অনেক ভাগ ব্যয় করে ফেলে।
এক সারি কৃত্রিম আলো যে রকম স্ট্রীটলাইট কিংবা হাইওয়ে, এক অদ্ভুত সমস্যার স্রষ্টা। বন্যপ্রাণী এই আলোময় স্থান পার করে এক প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত যেতে বাধা প্রাপ্ত হয়। এই ঘটনা কে বিজ্ঞানীরা বলে "Crash Barrier Effect" ।
Image courtesy of Phil DeVries.
কৃত্রিম আলো পোকামাকড়দের তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে টেনে বের করে আনছে। এতে তাদের প্রজাতির ভবিষ্যতের বড় ক্ষতি। তাদের প্রজনন চক্রে বড়সড় হস্তক্ষেপ বলা যেতে পারে। অনেক সময় তারা অযোগ্য স্থানে তাদের ডিম পাড়ে। ওই স্থানে মানিয়ে না নিতে পেরে তাদের দলে দলে মৃত্যুও ঘটছে, যার পরিণাম পর দিন ভোরে স্ট্রীটলাইট তলে দেখতে পাওয়া যায়। ব্যাঙ জাতীয় প্রাণীর সোনায় সোহাগা। এই সব কিছু কে একত্র করলে যা দাঁড়িয়েছে, তাকে বলা হয় "Vacuum Cleaner Effect"। অনেক পোকা আবার Bulb আলোর তাপে পুড়ে মারা যায়।
সংখ্যায় আসি
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোকা ধরার পরীক্ষা করে দেখলে সংখ্যাটা তাদের ঘাটতির জানান দেবে। Eisenbeis এই তথ্য লক্ষ্য করেন :
এই সমস্ত পরীক্ষায় পরিবেশগত পরিস্থিতি এক নয় -- পোকার আবাস কমে এসেছে, রাসায়নিক কীটনাশক-এর ব্যবহার বেড়ে চলেছে , ক্রমবর্ধমান শহর - শহরতলি, পথঘাট - যেগুলো ও আবার এই পতনের কারণ ।
খারাপ আলো, অতি খারাপ আলো :
পোকা আকর্ষণ করতে Mercury Vapour lamps এর জুড়ি নেই। বিশেষজ্ঞরা এই আলোর ব্যবহার করে থাকে নানা বিধ পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা নিরীক্ষায়। Sodium vapour lamp, incandescent bulbs আর fluorescent bulb -- দ্বারা পোকা আকৃষ্ট হয়। এই প্রভাব খানিক কম হবে যদি LED Bulb বা হলুদ রঙের Edison lamps ব্যবহার করা যায়।
উৎস
Dern, Evan. “Light Pollution Decimates Insects in the Environment.” FAU Astronomical Observatory, Florida Atlantic University Department of Physics.
Justice, Michael. “Light Pollution and Insects: Insect Attraction to Various Types of Residential Lights.” Global Science Engagement, AAAS 2016 Annual Meeting, 14 Feb. 2016, Washington DC.
Comments
Post a Comment